নিজস্ব প্রতিবেদক
মানিকগঞ্জের সদর থানার চাঞ্চল্যকর আশরাফুল ইসলাম পলাশ (৩৩) হত্যা মামলায় প্রধান হত্যাকারী মো. সোয়েব (২২) এবং মো. ছাকিন খান (২০) দ্বয়কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-০৪, সিপিসি-০৩ ও র্যাব-১৩, সিপিসি- সদর এর যৌথ একটি টিম।
মঙ্গলবার ভোরে মানিকগঞ্জ র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লেঃ কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লালমনিরহাট জেলার তিস্তা ব্রিজের টোল প্লাজার পুর্ব পাশ হতে আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া সোয়েব এবং ছাকিন মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এজাহারের বিবরণ উল্লেখ করে র্যাব জানান, ভিকটিম আশরাফুল ইসলাম পলাশ (৩৩) নবীনগর কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানীতে চাকুরী করত। ভিকটিম মানিকগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম বান্দুটিয়া শুশুর খবির উদ্দিনের বাড়িতে প্রায় এক যুগ যাবৎ বসবাস করে আসছিল সে।
ভিকটিমের সাথে সোয়েব ও ছাকিন খান এর দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়া বিরোধ চলিয়া আসছিল। বিবাদীদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০ই সেপ্টেম্বর রাতে শহরের বেউথা ব্রীজ সংলগ্ন মাছের আড়ৎ এর নিকট হতে ছাকিন খান কথা আছে বলে ভিকটিমকে ব্রীজের পশ্চিম পাশের মুরগীর ফার্মের নিকট ডেকে নিয়ে গেলে সেখানে উপস্থিত থাকা বিবাদী সোয়েবসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন বিবাদীদের সাথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে বিবাদীরা পুর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে ধারালো অস্ত্র দিয়া কোপ মেরে মাথার বাম পাশে পিছনে ও সামনে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়িলে উপরোক্ত বিবাদীরা হত্যা নিশ্চিত করার জন্য তাদের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়া এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিমের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পথিমধ্যে ভিকটিমের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ভিকটিমের শ্যালক নজরুল ইসলাম নয়ন উন্নত চিকিৎসার জন্য ভিকটিমকে ডক্টর কেয়ার এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ঢাকায় ভর্তি করে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নত হলে পুনরায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতাল মানিকগঞ্জে ভর্তি করানো হয়। অতঃপর ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ সেপ্টেম্বর মারা যান। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আসামীদেরকে গ্রেফতার করে র্যাব।