ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার ধামরাইয়ে জোর করে রিজাইনপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে শ্রমিক ছাঁটায়ের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পলমল গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে উপজেলার সোমবাগ ইউনিয়নের জয়পুড়া এলাকায় কারখানার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
এতে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও নেসাবাহীনির সহযোগীতাই তাদের সেখান থেকে সড়িয়ে কারখানার ভিতরে পাঠানো হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার সামনে প্রায় কয়েক শত নারী ও পুরুষ শ্রমিক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এই সময় তারা বলেন আমাদের দাবি মানতে হবে। শ্রমিক ছাঁটায় ও বেতন বৈষম্য এর প্রতিবাদে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন।
শ্রমিকরা জানান, পলমল গ্রুপের অনেক গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। তাদের চাইতে আমাদের বেতন কম এবং শ্রমিকদের কোন নোটিশ না দিয়ে জোর করে রিজাইন পত্রে স্বাক্ষর করিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেয়। এর আগে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের কাছে নানা দাবি ধাওয়া জানিয়ে আসছিলেন।
প্রতিষ্ঠান তাদের মৌখিকভাবে আশস্ত করলেও দাবি মেনে নেয়নি। কিন্তু তারা অবৈধভাবে গতকাল ১৮০জন শ্রমিককে কারখানা থেকে জোর করে ছাঁটায় করেন। এরই জের ধরে বিক্ষোভ শুরু করেন।
দাবিগুলো হলো- কর্ম দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে চাকরি স্থায়ীকরণ করা, কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়া, নাইট বিল দেওয়া, কোম্পানির ভেতরে কোনো শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায়ভার কোম্পানিকে নেওয়া, কোম্পানির প্রতিটি বিভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা এবং সেই সাথে সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এক নারী শ্রমিক বলেন, গতকাল আমাকে জোর করে কারখানা থেকে বের করে দেয়। আমি তখন বলেছি আমাকে বের করে দেন কি কারণে। তখন তারা বলে তুমি ঠিকমত প্রডাকশন দিতে পারনা। এছাড়া তিনি আর বলেন, যদি কোন শ্রমিক রিজাইন দরখাস্তে স্বাক্ষর না করে তাকে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেয়। আমাদের দাবি অন্যায়ভাবে কোন শ্রমিককে ছাঁটায় করতে পারবে না। যদি তারা আমাদের দাবি না মানে, তাহলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুসিয়ারী দেন।
এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে নিরাপত্তার জন্য কারখানার সামনে হাইওয়ে পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখাযায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে সমঝোতায় আসার চেষ্টা চালায়।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ এর পুলিশ-পরিদর্শক মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, শ্রমিকরা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছেন মালিকের কাছে। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি শাস্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে এ বিষয়ে কারখানার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।